অন্ধকারে ঢাকা এক গোপন সত্য – Part 4 (শেষ পর্ব)

ভূমিকা

এই গল্পের আগের তিনটি পর্বে আমরা জেনেছি নৃপেন মল্লিকের অভিশপ্ত অতীত, পোড়োবাড়ির অদ্ভুত রহস্য এবং একজন লেখকের জীবনে সেই অভিশাপ কীভাবে ঢুকে পড়েছে। আজ আমরা পৌঁছালাম সেই ভয়ঙ্কর রহস্যময় যাত্রার চূড়ান্ত পর্বে।

এই গল্প কারো বানানো নয়। এটি আমার জীবন থেকে নেওয়া। আজ, আমি আপনাকে বলবো সেই মুহূর্তটির কথা—যখন আমি বুঝলাম, “এই গল্পের শেষ মানেই আরেকটি শুরু।”

তারিখ ছিল ১৩ই জুলাই। সময় রাত ১২:৪৪।
কলম ধরা হাত কাঁপছে। ঘরটা অদ্ভুত নীরব।
আমি বুঝলাম, আজ রাতেই কিছু একটা ঘটবে।

পর্দা নাড়ছে না, অথচ বাতাস নেই। দেওয়ালে ঝুলে থাকা ঘড়িটা একবারে থেমে গেল।
১২:৪৪… আর এক সেকেন্ডও এগোয় না। যেন সময় থেমে গেছে।

ঘরের কোণে রাখা ক্যামেরা নিজে থেকে অন হয়ে গেল।

আমি শুয়ে থাকলেও চোখ রাখতে পারছিলাম না। হঠাৎ, দরজার নিচ দিয়ে লাল আলো ছড়িয়ে পড়লো ঘরে।
একটা আওয়াজ—নিঃশব্দ কান্নার মতো।

আমি বিছানা থেকে উঠতেই দেখি, জানালার কাচে কেউ লিখে দিয়েছে—
"এই শেষ, না শুরু?"

আমি ছুটে গেলাম টেবিলের দিকে।
ডায়েরির শেষ পৃষ্ঠায় লেখা—
"মন্ত্র শেষ নয়, শেষটা লেখো তুমি। না হলে তুমিও পোড়ো।"

আমি শিউরে উঠলাম।

ডায়েরির পাতাগুলো নিজে থেকেই উল্টাতে লাগলো। হঠাৎ থেমে গেল একটা পাতায়—
"শেষ দানব এখনও ঘুমায়নি। তাকে জাগিও না।"

ঠিক তখনই আবার সেই ফিসফিসে গলা—
"লিখে যা, লিখে যা… নয়তো তুই শেষ…"

আমি বুঝলাম, এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে গেলে আবার যেতে হবে সেই পোড়োবাড়িতে।

এবার রাত ৩:৩০। আমি সাহস করে পৌঁছালাম সেখানে।
চাঁদের আলো নেই। বাতাসে পোড়া কাঠের গন্ধ।
ঘরের ভেতর ঢুকেই দেখি—আগের সেই খাঁচা এবার খোলা। আর তার পাশে দাঁড়িয়ে কেউ।

সে মুখ ফিরিয়ে ছিল।

আমি জিজ্ঞাসা করলাম—
"তুমি কে?"

সে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ালো। মুখের অর্ধেক ছিল পোড়া। চোখের ভেতর কেবল ঘৃণা।
সে বললো—

"তুইই শেষ লেখক। তোকে দিয়েই শেষ হবে।"

তারপর সেই পোড়োবাড়ির দেওয়াল খুলে গেল, আর আমি পড়ে গেলাম এক অন্ধকার সুড়ঙ্গে। যেটা কোনো সময়ের মধ্যে পড়ে না। সেখানে কেবল কান্না, চিৎকার, আর পুরনো পাণ্ডুলিপির ছেঁড়া পৃষ্ঠা।

আমি চোখ খুললাম নিজের বিছানায়। সকাল ৭টা বাজে।

সব কিছু ঠিকঠাক মনে হচ্ছে।

কিন্তু আমার ডেস্কে রাখা ডায়েরির পাতা খুলে গেছে নিজে থেকেই। সেখানে লেখা—

“শেষটা লেখা হলো। এখন অন্য কেউ শুরু করবে।”

আর নিচে একটা নাম—

"বিপ্লব দাস – লেখক, গল্পের অংশ"

আমার শরীর ঠান্ডা হয়ে গেল। কারণ, আমি তো কখনও ডায়েরির কোনো পাতায় নিজের নাম লিখিনি।

আজ এই ব্লগ লেখার সময়েও আমার খাতার পাতা নিজে থেকেই খুলে যাচ্ছে।
আয়নায় মাঝে মাঝে দেখতে পাই এমন একজনকে, যে আমি নই—
কিন্তু সে হাসে আমার মতো।

আমি জানি, সে এখনও আছে।

তবে জানেন কী?

সেই রাতের ক্যামেরা রেকর্ডিং হারিয়ে গেছে। কিন্তু মোবাইল ট্রাইপডে একটা ভিডিও পাওয়া গেছে—যেখানে আমি দাঁড়িয়ে বলছি—"শেষটা তো আমি লিখিনি!"

উপসংহার

এই গল্প এখানেই শেষ, কিন্তু কি সত্যিই শেষ?

যদি আপনি এই গল্পটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন, তাহলে একটা কথা মাথায় রাখুন—

"গল্প যত গভীর হয়, অভিশাপ তত জোরালো হয়…"

আপনার পাশে কেউ নেই তো এখন?

একবার আয়নায় তাকান।

আপনার মতামত জানান

আপনার মনে কী হয়েছে গল্পটি পড়ে? আপনি কি কখনও এমন কোনো অদ্ভুত ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন?
কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। এই চতুর্থ পর্ব নিয়ে আপনার মতামত খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

📢 আমাদের ফলো করুন নতুন গল্প পড়তে এবং দেখতে –


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন